Football

প্রতিশোধ নিয়ে সেমিফাইনালে ব্রাজিল! প্যারাগুয়ের বিধায়

brazil-Honduras

এবার তাদের ঘরের মাঠে আয়োজিত হচ্ছে কোপার নতুন আসর। ফলে প্রত্যাশার পারদটাও অনেক বেশি। গ্রুপপর্বে অপরাজিত থেকেই তারা উঠে এসেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকায় গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়েছিল ব্রাজিল। এর আগে ২০১১ ও ২০১৫ সালে পরপর দুই আসরে কোয়ার্টার ফাইনালেই প্যারাগুয়ের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল তারা। দুইটি পরাজয়ই ছিলো টাইব্রেকারে গিয়ে। যে কারণে এবারের কোয়ার্টারেও প্যারাগুয়েকে পেয়ে খানিক সতর্কই ব্রাজিল। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান সাক্ষ্য দিচ্ছিল প্যারাগুয়ের পক্ষে। বিশেষ করে ম্যাচ যখন গড়ালো টাইব্রেকারে, তখন ব্রাজিলের সমর্থকদের মনে যেনো উঁকি দিচ্ছিলো ২০১১ ও ২০১৫ সালের কোপা আমেরিকার কথা। তবে সেসবকে পাত্তা দেননি গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী অ্যালিসন বেকার।

টাইব্রেকারে প্যারাগুয়েকে হারিয়ে কোপা আমেরিকায় সেমিফাইনালে উঠল ব্রাজিল। এ যেন ২০১১ ও ২০১৫ সালের আসরের প্রতিশোধ নিলেন সেলকাওরা। সেই দুই আসরে প্যারাগুয়ের কাছে টাইব্রেকারে হেরেই কোপা আমেরিকা থেকে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল। এবার সেই টাইব্রেকারেই প্যারাগুয়েকে বিদায় করে দিলেন তারা। আজ ভোরে ব্রাজিলের গ্রেমিও এরেনায় প্যারাগুয়ের মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। শুরু থেকেই প্যারাগুয়ের রক্ষণভাগে মুহুর্মুহু আক্রমণ করতে থাকেন দানি আলভেজরা। পুরো ৪৫ মিনিট ধরেই ব্রাজিলের আক্রমণ প্রতিহত করতেই ব্যস্ত থাকে প্যারাগুয়ে। কিন্তু কাজের কাজটি করতে পারছিলেন না কোচ তিতের শিষ্যরা।

খেলার তৃতীয় মিনিটে গোলের সহজ সুযোগ মিস করেন ব্রাজিলের আক্রমণভাগের খেলোয়াড় রবার্তো ফিরমিনো। কিন্তু ডি-বক্সে গোলবারের খুব কাছে থেকেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি তিনি। একই রকম সুযোগ এসেছিল প্যারাগুয়ে শিবিরেও। ম্যাচের ২৯তম মিনিটে পেরেজের কাছ থেকে বল পেয়ে শট নেন গঞ্জালেজ। কিন্তু এলিসন বেকারের দুর্দান্ত সেভে সে যাত্রায় বেঁচে যায় ব্রাজিল। গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে দুদলই। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে ১০ মিনিটের ব্যবধানে চার খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। প্যারাগুয়ের সান্তিয়াগো আরজামেন্দিয়া দুয়ার্তে, ইভান পিরিস ও জুনিয়র আলোনসো এবং ব্রাজিলের ফিলিপ্পে লুইস দেখেন হলুদকার্ড।

স্কোরবোর্ডে কোনো গোল জমা না করেই শেষ হয় প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামেন অ্যালেক্স সান্দ্রো। ম্যাচের ৫৪তম মিনিটে হলুদকার্ড দেখা ফিরমিনোকে ফেলে দেন ফাবিয়ান বালবুয়েনা। সঙ্গে সঙ্গে রেফারির বাঁশিতে পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। হলুদকার্ড দেখানো হয় ফাবিয়ান বালবুয়েনাকে। এ সময় প্যারাগুয়ের খেলোয়াড়রা রেফারির এমন নির্দেশ মানতে প্রবল আপত্তি জানান। ফলে সিদ্ধান্তের ভার গিয়ে পড়ে ভিএআরের ওপর। ভিএআর পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত বদল করেন রেফারি। তবে পেনাল্টি নয় ফ্রিকিকের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু বালবুয়েনার হলুদকার্ডটিকে পরিণত করেন লালে। ফলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ১০ জনের দলে পরিণত হয় প্যারাগুয়ে। আর সেই ফ্রিকিকটিও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে গোলবার বরাবর দূরপাল্লার জোরালো শট নেন আর্থুর। তবে প্যারাগুয়ের গোলরক্ষক ফার্নান্দেজ সে বল ঠেকিয়ে দেন। এর ৫ মিনিট পরেই ডি-বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পান গ্যাব্রিয়েল জেসুস। কিন্তু এমন সহজ সুযোগও মিস করেন এ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। শেষের ১০ মিনিটে গোলের দেখা পেতে অ্যালানের বদলে উইলিয়ান এবং দানি আলভেসের বদলে লুকাস পাকুয়েতাকে মাঠে নামান কোচ তিতে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। এভাবেই নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষে ইনজুরি টাইম যোগ হয় আরও ৭ মিনিট। সেখানেও ব্যর্থ হয় দুদলই। অবশেষে জয়-পরাজয় নিশ্চিত করতে টাইব্রেকারের দারস্ত হন রেফারি। যেখানে গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারের একক কৃতিত্বে প্যারাগুয়েকে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে ব্রাজিল। টাইব্রেকারের গুস্তাভো গোমেজের প্রথম শটটি দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন অ্যালিসন। এভাবে চতুর্থ শটে গিয়ে রবার্তো ফিরমিনো গোল করতে ব্যর্থ হলে সমতা চলে আসে টাইব্রেকারে।

কিন্তু সে সুযোগ পায়ে ঠেলে দেয় প্যারাগুয়ে। পঞ্চম শট মিস করলে আবার ব্রাজিলের পক্ষে চলে যায় ম্যাচটি। নিজেদের শেষ শটে গোল করে ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত করেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। আজ সেমিতে ওঠার অপর লড়াইয়ে ভেনিজুয়েলার মুখোমুখি আর্জেন্টিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *