সাকিবকে করোনার ‘উপহার’
করোনাভাইরাসের প্রকোপে প্রায় সারাবিশ্ব লকডাউন। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ পরিস্থিতিতে বারবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ঘন ঘন সংবাদের শিরোনাম হচ্ছেন তিনি। করোনা যেন পরোক্ষভাবে নিষেধাজ্ঞা থেকে তাকে মুক্তি দিয়েছে।
সঙ্কটকালে আরেক সুখবর পেয়েছেন সাকিব। দ্বিতীয়বার বাবা হচ্ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেসবুকে নিজেই এ খবর জানিয়েছেন শিশিরপতি৷ করোনা সংকটের আঁধারে যেন খুশির আলো দেখতে পাচ্ছেন বাংলাদেশ তথা বিশ্ব ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র।
জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় গেল বছরের অক্টোবরে সাকিবকে সব ধরনের ক্রিকেটে ২ বছর নিষিদ্ধ করে আইসিসি। তবে দোষ স্বীকার করায় তার নিষেধাজ্ঞা ১ বছর স্থগিত করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের অক্টোবরে ক্রিকেটে ফিরবেন তিনি। তাই ধরেই নেয়া হয়েছিল, এসময়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারকে খুব মিস করতে হবে। তার অনুপস্থিতিতে ভীষণ ভুগতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে৷
ভুগতেও শুরু করেছিলেন টাইগাররা। বিশেষ করে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিব থাকলে, এমন ভরাডুবি হতো কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন অসংখ্যবার উঁকি দিয়েছে৷ ভাগ্যিস করোনার কোপে সফরের শেষ পর্বটা আর হয়নি। হলে সাকিববিহীন বাংলাদেশ ক্রিকেটের অপরিপক্কতা ও কঙ্কাল আবারও সামনে আসত।
আপাতত আগামী অক্টোবরের আগে টাইগারদের আর কোনো সিরিজ খেলার সম্ভাবনা নেই৷ ওই সময়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হবে কি-না, তাও বলা যাচ্ছে না৷ তদুপরি আসছে ৬ মাসের মধ্যে করোনা সংকটের সব সমস্যা হয়ে যাবে, সেটারও গ্যারান্টি দেয়া যাচ্ছে না। তবে নিঃসন্দেহে সঙ্কটময় অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
পরিপ্রেক্ষিতে এটা নিশ্চিত, প্রাণঘাতী ভাইরাসের কারণে মাঠে সাকিবকে অনেকটা কম মিস করবে বাংলাদেশ। ফিটনেস ও ফর্ম ধরে রাখতে পারলে দল ও সতীর্থদেরও অনেক কম সময় মিস করবেন তিনি।
নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে ভক্ত-সমর্থকদের খুব মিস করছিলেন ক্রিকেটের বড় বিজ্ঞাপন হয়ে ওঠা এই অলরাউন্ডার৷ করোনা এসে সেই আফসোসও যেন ঘুচিয়েছে তার৷ এখন প্রায় নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজির হচ্ছেন সাকিব। দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর খবর জানাচ্ছেন নিষিদ্ধ হওয়ার আগে বিশ্বকাপ মাতানো ক্রিকেটার৷
সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অনাথ-অসহায়দের জন্য তহবিল সংগ্রহ করছেন তিনি। হাসপাতালে পাঠাচ্ছেন করোনা শনাক্তকরণ কিট। সংকট না এলে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর, নিষেধাজ্ঞার আড়ালে থেকে কী মানুষের এত কাছে আসার সুযোগ পেতেন লাল-সবুজ জার্সিধারীদের পোস্টারবয়?