Lifestyle

প্রতিদিন শসা খেলে যে ১১টি উপকার পাবেন

শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কী কীশসা পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সবজি। শশার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন কে, ভিটামিন বি, কপার, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ। প্রতিদিন শসা খেলে পুষ্টির ঘাটতি প্রতিরোধ হয়; বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদে রোগের ঝুঁকি কমে।

প্রতিদিন শসা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য পুষ্টি পায়। শসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পানি। শসা শরীরকে পানিপূর্ণ রাখতে সাহায্য করে। আমাদের ডায়েটে সালাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার আর শসা সালাদকে স্বাস্থ্যকর যেমন করে তেমনি স্বাদও যুক্ত করে। কথায় বলে ডায়াবেটিস থেকে ডায়েরিয়া সব কিছুর জন্যই শসা অপরিহার্য। প্রচণ্ড গরমে দেহের পানির ভারসাম্য বজায় রাখে শসা। এর ফলে দেহকে সজীব রাখতে শসার কোনও বিকল্প নেই।

১. মানসিক চাপ কমায়
শসা ভিটামিনে ভরপুর, বিশেষ করে ভিটামিন বি১, বি৫ ও বি৭ রয়েছে এতে। এ ভিটামিনগুলো সমন্বিতভাবে স্নায়ুকে শিথিল করে এবং মানসিক চাপের জন্য হওয়া উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।

২. ওজন কমায়
ওজন কমানোর খাদ্যতালিকায় শসা একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। তবে কেবল শসা খেলে ওজন কমে না। ভারসাম্যপূর্ণ খাবার ও ব্যায়ামের পাশাপাশি শসা খাওয়া ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে শসা ওজন বাড়ায় না। তাই সালাদ বা তরকারি হিসেবে শসা খাদ্যতালিকায় রাখুন।

৩. মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
শসার মধ্যে রয়েছে প্রদাহরোধী ফ্ল্যাবোনয়েড। এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। ফ্ল্যাবোনয়েড কেবল স্মৃতিশক্তির জন্য ভালো নয়, এটি বয়স বাড়ার কারণে হওয়া ক্ষতি থেকেও মস্তিষ্ককে সুরক্ষা দেয়।

৪. হজম ভালো করে
শসার মধ্যে রয়েছে দ্রবণীয় আঁশ ও পানি। শসার সঙ্গে সিস্যাম সিড ও অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে সালাদ তৈরি করুন। এটি এসিড রিফ্লাক্স প্রতিরোধ করে হজম ভালো করতে সাহায্য করবে।

৫. হৃদপিণ্ড ভালো রাখে
বেশি পরিমাণ পটাশিয়াম খাওয়া উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। পটাশিয়াম ইলেকট্রোলাইটের মতো কাজ করে এবং কোষীয় কার্যক্রমকে ভালো রাখে। এটি হৃদপিণ্ডের কার্যক্রম ভালো রাখতে উপকারী।

৬. বিষাক্ত পদার্থ দূর
শসার মধ্যে রয়েছে পানি। এটি পানিশূন্যতা ও ক্লান্তিভাব কমায়। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে কার্যকর।

৭. ত্বক উজ্জ্বল করতে সহায়ক
ভিটামিন এবং পানির সংমিশ্রণ আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।

৮. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে বলে এটি হজমে সাহায্য করে।

৯. চোখের জ্যোতি বাড়ায়
শসায় প্রচুর পরিমাণে সিলিকা আছে। গাজরের রসের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে খেলে দেহের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নেমে আসে। এতে গেঁটেবাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

১০. চোখের জ্যোতি বাড়ায়
সৌন্দর্যচর্চার অংশ হিসেবে অনেকে শসা গোল করে কেটে চোখের পাতায় বসিয়ে রাখেন।এতে চোখের পাতায় জমে থাকা ময়লা যেমন অপসারিত হয়, তেমনি চোখের জ্যোতি বাড়াতেও কাজ করে।চোখের প্রদাহপ্রতিরোধক উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকায় ছানি পড়া ঠেকাতেও এটি কাজ করে।

১১. মাথাধরা থেকে নিষ্কৃতি
ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকের মাথা ধরে। শরীর ম্যাজম্যাজ করে। শসায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও সুগার আছে। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েক স্লাইস শসা খেয়ে নিলে ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পর এ সমস্যা থাকবে না।

শশার অপকারিতা
যেহেতু শশা একটি কম ক্যালরিযুক্ত খাবার তাই শশা কেন অন্য যেকোন কম ক্যালরি যুক্ত খাবার একনাগারে খেতে থাকলে ওজন কমে যাবে। কিন্তু সেই সঙ্গে আপনার শরীরে দেখা দেবে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদনের ঘাটতি। অন্য খাবার কম খেয়ে সারাদিন বা অতিরিক্ত পরিমানে শশা খেতে থাকলে বা ক্ষুধা লাগলেই শশা খেলে বদহজম, গ্যাসের সমস্যাসহ পেট ফাঁপা, পেট ব্যাথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি দেখা দেয়।

প্রায় এক মাস ধরে ওজন কমাতে সারাক্ষণ শশা খেলেই ঘটবে নানা বিপত্তি। শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে যাবে। কাজ করার শক্তি পাবেন না। রক্ত কমে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এছাড়াও রক্তে গ্লুকোজের অভাবে মাথা ঘুরে পরে যাওয়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটতে পারে।