করোনা ভাইরাস

বাড়িতে কী ভাবে অক্সিজেন তৈরি করা যায়, গুগলে খুঁজছেন ভারতীয়রা

বাড়িতে কী ভাবে অক্সিজেন তৈরি করা যায়, গুগলে খুঁজছেন ভারতীয়রা

এমন পরিস্থিতিতে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে অনেক ভারতীয় খুঁজছেন, ‘বাড়িতে কীভাবে অক্সিজেন তৈরি করা যায়’, ‘কীভাবে অক্সিজেন তৈরি করা যায়’, ‘কীভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার তৈরি করা যায়’-এর মতো বিষয়। গুগল সার্চ ইঞ্জিনের পরিভাষায় এসব বিষয় বর্তমানে ‘ট্রেন্ডিং’।

করোনাভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পড়ার এবং সংক্রমণ বাড়তে থাকার পর দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় দরকারি সামগ্রী যেমন অক্সি-মিটার, পোর্টেবল অক্সিজেন ক্যান, পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, ফেস-শিল্ড এমনকী অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিক্রিও ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।

এদিকে অক্সিজেনের আকালে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ভারতের রাজধানী শহর দিল্লিতে। ফলে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা আর তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অক্সিজেনের কালোবাজাড়ী।

হাজার হাজার মানুষের প্রশ্নের চাপে ‘How to make oxygen at home?’-এর Search value বাড়তে শুরু করে। বলে রাখা ভাল, কোন বিষয়ে কত বেশি মানুষ Search করছেন, কোন বিষয়ে অধিক সংখ্যক মানুষের কৌতুহল, তার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হয় এই Search value।

গুগল সার্চ ইঞ্জিনে ‘হাউ টু’ শব্দ দুটি ব্যবহার করে অক্সিজেন–সংক্রান্ত নানা তথ্য খোঁজার চেষ্টা করেছেন ভারতের মানুষ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খোঁজা হয়েছে, বাড়িতে কীভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার তৈরি করা যাবে, এই প্রশ্ন। স্বাভাবিকভাবেই বাড়তে থাকে এর ‘সার্চ ভ্যালু’। নির্দিষ্ট সময় কোনোও বিষয় কত বেশিসংখ্যক মানুষ সার্চ করছেন, তার ওপর একটা মূল্য নির্ধারিত হয়। এর নাম ‘সার্চ ভ্যালু’। দেখা যায়, গত শুক্রবার এ প্রশ্নের সার্চ ভ্যালু ১০০ হয়ে যায়। সপ্তাহখানেক আগে, অর্থাৎ ১৫ এপ্রিল নাগাদ যার সার্চ ভ্যালু ছিল ১০-১৩। অক্সিজেন তৈরির আগ্রহ সবচেয়ে বেশি গুজরাটের মানুষের। সেখানে সার্চ ভ্যালু ৭০। এরপরই তালিকায় রয়েছে উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশ। এই তিন রাজ্যে প্রশ্নটির সার্চ ভ্যালু যথাক্রমে ৫৫, ৪৯ ও ৪৬।

See also  কোভিড-১৯: জেনে নিন শরীরে অক্সিজেন কমে গেলে জানবেন কিভাবে, কি করবেন

বিষয়টি সর্বপ্রথম নজরে আনেন বিশাল গোন্ডাল, যিনি ফিটনেস ব্র্যান্ড Goqii এবং NCore Games-এর প্রতিষ্ঠাতা। এই NCore Games-ই হল FAU-G গেমের ডেভেলপার। একটি টুইট করে ‘কী ভাবে বাড়িতে অক্সিজেন তৈরি করবেন’, তার Google Search-এর বিষয়টি স্ক্রিনশট সহযোগে শেয়ার করেছেন। আপনারা চাইলেও নিজে থেকে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। তার জন্য Google-এ গিয়ে ‘How To’ লিখে সার্চ করলেই দেখতে পাবেন, প্রথমেই আপনাকে ‘How To Make Oxygen’ এবং তার ঠিক পরেই ‘How To Make Oxygen Cylinder’ দেখানো হচ্ছে।

ভারতের কোন কোন রাজ্য থেকে সবথেকে বেশি পরিমাণে বাড়িতে অক্সিজেন তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হচ্ছে? সবার প্রথমেই রয়েছে গুজরাত 70, তার ঠিক পরেই মহারাষ্ট্র 49, উত্তরপ্রদেশ 55 এবং মধ্যপ্রদেশ 46। অন্য দিকে আবার ‘How To Make Oxygen’ এই বিষয়েরও সার্চ ট্রেন্ডে বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে। গতকাল এই বিষয়ে Google Trends থেকে 36 সার্চ ভ্যালু নজরে এসেছিল। এক সপ্তাহ আগে সেই সংখ্যাটাই ছিল 5-এর কাছাকাছি। এখানেও সবার প্রথমেই রয়েছে গুজরাত 87 এবং তার ঠিক পরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র 61 এবং উত্তরপ্রদেশ 55। আর তার ঠিক এক মাস আগে অর্থাৎ হোলির মাত্র কয়েক দিন পরই, এই দুই সার্চেরই Google Trends-এ ভ্যালু ছিল মাত্র 4।

See also  ডেঙ্গু জ্বর ও করোনার লক্ষণ এক হলেও পার্থক্য বুঝবেন কিভাবে?

অক্সিজেন সম্পর্কে নিম্নের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর জানা থাকা দারকার

কাদের যে কোনও মুহূর্তে অক্সিজেনের দরকার হতে পারে?
করোনাভাইরাস ফুসফুসকে দুর্বল করে তোলে। যাঁরা অনেক দিন ধরেই শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের বেশি করে হাতের কাছে অক্সিজেন রাখা উচিত। এর মধ্যে হাঁপানি, দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিস, কনজেস্টিন হার্ট ফেলিওর, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, ফুসফুসের ক্যান্সার, নিউমোনিয়া, পালমোনারি ফাইব্রোসিস বা স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো রোগ রয়েছে।

বিপদকালে ঠিক কতটা অক্সিজেন দেওয়া উচিত রোগীকে?
এটা একমাত্র ডাক্তারই বলতে পারবেন ফুসফুস পরীক্ষা করার পরে যে একজন রোগীর প্রতি মিনিটে কতটা অক্সিজেনের প্রয়োজন রয়েছে। যাঁদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো রোগ থাকে, তাঁদের ঘুমের মধ্যে অক্সিজেন দিতে হয়। শারীরিক পরিশ্রম হলে অনেকজনকে অক্সিজেন দিতে হয় কিছুক্ষণের জন্য, আবার অনেকজনকে ২৪ ঘণ্টাই অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হয়।

কাছে রাখা যায় পোর্টেবল অক্সিজেন কনসেনট্রেটর
এটির ওজন অপেক্ষাকৃত কম হয় এবং বেশির ভাগ সময়েই ব্যাটারিতে চলে। ফলে কোথাও যাওয়া-আসার সময়েও সহজেই এটি বহন করা যায়।

See also  করোনার অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমতি পেল ৭৭ প্রতিষ্ঠান, ফি ৭০০ টাকা

স্ট্যান্ডার্ড অক্সিজেন কনসেনট্রেটর আসলে কী?
অক্সিজেন সিলিন্ডার যে রকম দেখতে হয়, এর সঙ্গে তার কোনও মিল নেই। এটি দেখতে অনেকটা চাকা লাগানো স্যুটকেসের মতো, এর তলায় চাকা থাকে। যন্ত্রটা একটু ভারি হয়, প্রায় ৫০ পাউন্ডের কাছাকাছি ওজন হয়। সেই জন্যই ঘরের এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সুবিধার জন্য তলায় চাকা লাগানো থাকে। প্লাগ ইন করে দেওয়ার পর এটি বিদ্যুতের সাহায্যে বাতাস থেকে অক্সিজেন তৈরি করতে পারে এবং অন্য দূষিত গ্যাসগুলিকে বের করে দেয়। অনেক সময় এর মোটর ব্যাটারি-চালিতও হয়ে থাকে।

অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের সঙ্গে আর কী রাখা দরকার?
অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের সঙ্গে একটি প্লাস্টিকের নল থাকে। এর মুখে দু’টি প্রান্ত থাকে যা রোগীর নাকে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে নাকে হলকা শুকনোভাব থাকে। এছাড়া থাকে মাস্ক, যা মুখে বসিয়ে দিলে সেখান থেকে অক্সিজেন সরবরাহ হয়। তবে এটা পরে থাকলে কথা বলতে, খেতে অসুবিধা হয়। অনেকে আবার ট্রান্সক্রেশনাল ক্যাথিটারের সাহায্য নেন, এই পদ্ধতিতে গলার মধ্যে নল প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয় যাতে সরাসরি শ্বাসনালীতে অক্সিজেন যায়। তবে এক্ষেত্রে গলায় সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়।