Heart Diseases

হার্ট অ্যাটাক : যেসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত সতর্ক হতে হবে

Sudden Cardiac Arrest- Causes & Symptoms

হার্ট যাতে ঠিক মতো কাজ করতে পারে তার জন্য হার্টের মধ্যে দিয়ে রক্ত সঞ্চালন খুব জরুরি। হার্টে রক্তে পৌঁছে দেওয়া ধমনীর মধ্যে কোনও কারণে ব্লক তৈরি হলে সমস্যা হয়
সাডেন কার্ডিয়াক ডেথের পিছনে নানা কারণ থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর জন্য দায়ী হৃদপিণ্ডের অনিয়মিত স্পন্দন। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে ‘অ্যারিদমিয়া’। একে অবহেলা করলে আচমকা ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা।

তবে চিকিৎসকদের মতে, হার্টের কমজোরি হয়ে পড়ার ঘটনা রাতারাতি হয় না, বরং বেশ আগে থেকেই সংকেত দিতে থাকে হার্ট। অনেক সময় দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ভিড়ে হার্টের সেই সংকেত আমরাই বুঝে উঠতে পারি না অথবা অবহেলা করে বসি।

কম বয়সে এরকম হলে বেশির ভাগ মানুষই গ্রাহ্য করেন না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, ৩০-৪০ বছর বয়সীদের সাডেন কার্ডিয়াক ডেথের ঝুঁকি বেশি। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের সাডেন কার্ডিয়াক ডেথের সমস্যা প্রায় দ্বিগুণ। তবে যাদের হার্টের অসুখ আছে তারা যদি নিয়মিত ওষুধ না খান, প্রেশার, সুগার নিয়ন্ত্রণ না করেন তাদের এই সমস্যার ঝুঁকি অনেক বেশি।

হার্টের অসুখকে দূরে রাখলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা স্বাভাবিকভাবেই থাকে না। তাই হার্টের কোনো প্রকার সমস্যাই অবহেলা করা উচিত নয় বলে জানান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা। বেশ কিছু উপসর্গ দেখলেই তাই সচেতন হওয়া খুব প্রয়োজন। কোন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে জানেন?

যেসব সমস্যা থাকলে সাবধান হবেন:

  • শ্বাসকষ্ট হার্টের অসুখের অন্যতম লক্ষণ। হাঁটাচলা বা অল্প পরিশ্রমে হার্টবিট বেড়ে যেতে পারে।
  • পায়ের পাতা, গোড়ালি ও পা ফুলে যাওয়া হার্ট ফেলিওরের কারণেও হতে পারে। এরকম হলে দ্রুত ডাক্তার দেখানো দরকার।
  • হার্টের সমস্যা থাকলেও দিনভর ক্লান্ত লাগে, কোনো কাজ করতে ইচ্ছে করে না। কাজেই অবহেলা করবেন না।
  • দ্রুত পায়ে হাঁটাচলা ও এক্সারসাইজ করার ক্ষমতা ক্রমশ কমতে শুরু করে। অল্প হাটলেই হাঁপিয়ে উঠতে হয়।
  • কাশি ও বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই শব্দ হলে সচেতন হতে হবে।
  • শরীরে পানি জমে ওজন বাড়তে শুরু করে।
  • ক্ষুধা কমে যায় ও বমি বমি ভাব থাকে।

তবে কেবল লক্ষণ জানলেই তো হবে না, অসুখ ঠেকিয়ে রাখার পাঠ নিয়েও স্পষ্ট থাকা জরুরি। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুর হার্টের যত্ন নিন, সঙ্গে নিজেদেরও, সার্বিকভাবে হার্ট ভালো রাখতে গেলে কয়েকটা নিয়ম মানতেই হয়। যেমন:

  • প্রথমেই পাত থেকে বাদ দিন তেল-মশলার খাবার। যখন-তখন তেলেভাজা, ফাস্ট ফুডও বন্ধ করতে হবে।
  • রেড মিট খুব ভালোবাসলে খান, তবে সপ্তাহে দুই পিসের বেশি নয়। কিন্তু হার্টের অসুখ থাকলে বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে থাকলে একেবারেই চলবে না।
  • ফ্যাট জাতীয় খাবার শরীরের প্রয়োজন আছে। কিন্তু অসুখ ও ওজন বুঝে, তাই ঠিক কতটুকু ফ্যাট শরীরে লাগবে তা আগে জেনে নিন ডায়েটেশিয়ান ও চিকিৎসকদের কাছ থেকে। তার চেয়ে বেশি ফ্যাট চলবে না।
  • ধূমপানে না বলতে শিখুন আজ থেকেই। মনের জোর ছাড়া এই অভ্যাস ত্যাগ করা যায় না। তাই শরীরের জন্যই এটা বাদ দিতে হবে। হবেই।
  • প্রতি দিন একটানা হাঁটুন অন্তত ২৫-৩০ মিনিট। যাদের হাঁটার নানা সমস্যা রয়েছে, তারা অন্তত সপ্তাহে ১৫০ মিনিট শরীরচর্চা করুন।
  • কোলেস্টেরল বেশি থাকলে সে সবে ইন্ধন দিতে পারে এমন খাবার কিন্তু চলবে না।
  • রাতের ঘুম আর সবুজ শাকসবজি খাওয়া, এই দুটোর সঙ্গে আপস করবেন না কখনও। রাত জেগে অফিস করতে হলে পেশা বদলান। একান্তই তা সম্ভব না হলে দিনের বেলা পর্যাপ্ত ঘুমোন। যদিও দিনের ঘুম কখনোই রাতের ঘুমের বিকল্প হতে পারে না। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য নিয়মগুলো মেনে চলুন, বাদ দেবেন না শরীরচর্চা।